Chairman Message
প্রফেসর ডক্টর মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান
চেয়ারম্যান
নিবরাস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
الحمد لله رب العالمين والعاقبة للمتقين والصلاة والسلام على أشرف
الأنبياء وسيد المرسلين وعلى اله وصحبه أجمعين. أما بعد:
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। নিবরাস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’র সম্মানিত সকল ভাই ও বোনকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানাচ্ছি এবং মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট আজকের ১৪তম বার্ষিক সাধারণ সভার সার্বিক সফলতা প্রত্যাশা করছি।
সম্মানিত সদস্যমণ্ডলী!
করোনাভাইরাস নামক বৈশ্বিক মহামারির প্রকোপে গোটা বিশ্বের ন্যায় আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশেও নানাভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, আপনজনসহ অনেক নিকটাত্মীয় ও কাছের মানুষ ইতোমধ্যে মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। খুব মনে পড়ছে ফাউন্ডেশনের এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেক্রেটারি মরহুম ড. শাইখ মুস্তাফিজুর রহমান-কে যিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ থেকে আমাদের থেকে বিদায় নিয়েছেন। তিনিসহ আমাদের যে সকল আপনজন বিদায় নিয়েছেন তাঁদের সকলের জন্য জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম কামনা করছি। আমাদের মাঝে যাঁরা অসুস্থ তাঁদের দ্রুত আরোগ্য লাভের এবং চলমান মহামারি হতে নাজাতের জন্য মহা মহীয়ানের নিকট দু’আ করছি।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা!
‘নিবরাস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’ একটি শিক্ষান্নোয়ন, জনকল্যাণমূলক ও সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান। একশত একজন সুশিক্ষিত ভাইয়ের প্রাণপ্রিয় এ প্রতিষ্ঠানটি ‘শিক্ষা, গবেষণা ও সমাজকল্যাণ’-এ তিন দফা কর্মসূচি নিয়ে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে । যুগে যুগে সমাজের জন্য একদল ত্যাগী মানুষের অবদানের ফলেই পৃথিবীর মানুষ বিভিন্নভাবে কল্যাণ লাভে ধন্য হয়েছে, সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মহান আল্লাহ তা’আলা কল্যাণের পথে তাঁর বান্দাদের প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হবার প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন: ‘তোমরা কল্যাণের পথে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হও’। বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী সাইয়্যেদুল মুরসালিন, রাহমাতুল্লিল আলামীন, প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর গোটা জীবনটাই ছিল বিশ্বজাহানের কল্যাণের জন্য নিবেদিত নবী-রাসুলগণের জীবনে সম্পদের যেমনি কোনো মোহ ছিল না, তেমনি তাঁরা কোনো সম্পদ রেখে যাবার ইচ্ছেও পোষণ করেননি বরং রেখে গেছেন ইলম বা জ্ঞান, যা মানুষের কল্যাণের জন্য অতি জরুরি। আর নবী-রাসুলগণের মিশন ও ভিশনকে সামনে রেখেই নিবরাস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠা ও পথচলা ।
সম্মানিত সদস্যবৃন্দ!
কোনো কোনো ক্ষেত্রে এককভাবে যে কাজ করা শুধু কঠিন নয়; বরং অসম্ভব, দলবদ্ধভাবে সে কাজ করা অতি সহজতর হয়। আল্লাহ তা’আলার শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে মানবজাতির প্রতি দেশ-জাতি ও সমাজের কল্যাণের লক্ষ্যে বেশ কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। যে কাজগুলো সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সম্মিলিত প্রচেষ্টার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম । সে মহৎ লক্ষ্যকে ধারণ করে ১০১ জন ভ্রাতৃপ্রতিম নিবরাস নামক এ প্রাণপ্রিয় প্রতিষ্ঠানে একত্রিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সে পথচলায় যদি আমাদের কারো মাঝে কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়, মনোমালিন্য, ক্ষোভ বা দুঃখ তৈরি হয় তাহলে ‘আল হুব্বু ফিল্লাহ’ এ নীতির আলোকে আমরা পরস্পরকে ক্ষমা করে দেবো, কিংবা যথাযথ প্রক্রিয়ায় তা নিরসন করে পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববন্ধনকে আরো প্রগাঢ় করে নেব। ছোট-খাটো মতবিরোধের কারণে আমাদের প্রাণপ্রিয় এ প্রতিষ্ঠান বা তার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যে যেন বিন্দুমাত্র স্থবিরতা বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে আমাদের সর্বোচ্চ সচেতনতা, সতর্কতা ও আন্তরিকতাপূর্ণ অবস্থান থাকা প্রয়োজন। পরম করুণাময় আমাদের এ প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে সর্বোপরি তাঁর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে যে কোনো পরিস্থিতিতে সিসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ রেখে কাজ করার তাওফিক দান করুন।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা!
আমাকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়ার পর থেকে আমি সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করেছি নিবরাসের স্বার্থে কাজ করতে। আমার যোগ্যতার সীমাবদ্ধতা থাকার পরও সেক্রেটারি জেনারেল ও ইসির সম্মানিত সকল সদস্য আমাকে দায়িত্ব পালনে যেভাবে অকৃপণহস্তে সহযোগিতা করেছেন সে জন্য তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সেক্রেটারি জেনারেল ও নির্বাহী কমিটিকে সাথে নিয়ে ফাউন্ডেশনের কাজসমূহকে সুচারুরূপে সম্পন্ন করে সম্মুখপানে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করেছি। তবে চলমান করোনাভাইরাস নামক বৈশ্বিক মহামারির অস্বাভাবিকতায় আমাদেরও স্বাভাবিক কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। আপনাদের পক্ষ হতে অর্পিত দায়িত্ব পালনে ভুল-ত্রুটির জন্য প্রথমে মহান রাব্বুল আলামীনের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনাদের নিকটও ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি প্রত্যাশা করছি।
সম্মানিত ভাই ও বোনগণ!
সামর্থ্যের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আপনারা আমাকে ‘নিবরাস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’-এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে সম্মানিত করেছেন, আপনাদের মতো সুশিক্ষিত ও সচেতন ভাইদের সাথে মহৎ উদ্দেশ্যে সম্পৃক্ত থেকে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়ে নিজেকে অত্যন্ত গৌরবান্বিত বোধ করছি। তবে মানবীয় দুর্বলতা ও ব্যর্থতার দায়ভার একান্তই আমার, আর অর্জিত সফলতার সবটুকুন কৃতিত্ব মহান আল্লাহ তা’আলার জন্য। মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের সকল ভালো উদ্যোগকে সফলতায় রূপান্তরিত করুন এবং আমাদের সকল কাজ, উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাকে একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে কবুল করুন। আমিন